৩৭তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষা

: প্রস্তুতির ২৫ পরামর্শ
১. আপনার লেখার মান বাড়াতে দুটো কাজ করবেন। এক, প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর কয়েকটি সোর্স থেকে পড়বেন। দুই, আপনার প্রস্তুতি যেমনই হোক না কেন, পরীক্ষার হলে ‘আই অ্যাম দ্য বেস্ট’ এই মনোভাব ধরে রাখবেন।
২. একটি প্রশ্নের জন্য যে সময়টি আপনি মনে মনে বেঁধে রেখেছেন, সে সময়ের মধ্যে কিংবা কাছাকাছি সময়ে যে করেই হোক, উত্তরটি লেখা শেষ করে দেবেন। একটি উত্তর বেশি ভালো করে লিখে আরেকটি উত্তর ছেড়ে আসা কিংবা কম লিখে আসাটা আত্মঘাতী। পরীক্ষা আবেগের জায়গা নয়, যেকোনো মূল্যে সব প্রশ্নের উত্তর করার জায়গা।
৩. ইংরেজিতে ভালো নম্বর পেতে চাইলে দুটো নীতি অনুসরণ করুন। এক, কোনো বানান ভুল করবেন না। দুই, ব্যাকরণগত ভুলবিহীন শুদ্ধ সহজ বাক্য লিখুন।
৪. বিজ্ঞানে আগের বছরের প্রশ্নগুলো আর ২-৩টা গাইডের সাজেশন সমাধান করে ফেললে অন্তত অর্ধেক প্রশ্ন কমন পেয়ে যাওয়ার কথা। প্রয়োজনীয় চিহ্নিত চিত্র, সমীকরণ দিন।
৫. প্রশ্ন কঠিন হবে কি সহজ হবে, এটা নিয়ে ভাবা মানে স্রেফ সময় নষ্ট করা। কারণ, লড়াইয়ের মাঠে সবার জন্যই একই নিয়ম, আপনার জন্য স্পেশাল কোনো প্রশ্ন পিএসসি করবে না। আপনি ঠিকঠাক উত্তর করতে না পারলে সে সমস্যা আপনার।
৬. সংবিধান মুখস্থ করার দরকার নেই। প্রশ্নের ধরন স্টাডি করে গুরুত্বপূর্ণ ধারাগুলো সম্পর্কে জেনে নিন, সেগুলোতে কী বলা আছে, ওইটুকু নিজের মতো করে লিখতে পারলেই চলবে।
৭. যে টপিকগুলো চর্চা করার ব্যাপার আছে (যেমন ব্যাকরণ), সেগুলো অবশ্যই অন্তত তিনটি গাইডবই থেকে চর্চা করবেন।
৮. আপনি যদি কোনো একটি বিষয়ে খুবই দুর্বল হন, তবে সে বিষয়ে সবল হওয়ার চেষ্টা বাদ দিয়ে যে বিষয়টি আপনি ভালোভাবে পারেন, সেটি আরও ভালো করে পড়ুন। এতে আপনি প্রথম বিষয়ে যত নম্বর কম পাবেন, দ্বিতীয় বিষয়ে আরও কম সময় দিয়ে তার চেয়ে বেশি নম্বর তুলতে পারবেন। সেই বেঁচে যাওয়া সময় অন্য একটি বিষয়ের পেছনে দিন।
৯. এক পৃষ্ঠা তথ্যবহুল লেখা তিন পৃষ্ঠা তথ্যবিহীন লেখার চেয়ে ভালো নম্বর পেতে বেশি সহায়তা করে।
১০. হাতের লেখা সুন্দর হতে হবে, এমন কোনো কথা নেই, লেখা যেন পড়া যায়। আপনার ফন্টের আকার বেশি বড় হলে, আপনি আপনার প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে একই সময়ে কম লিখতে পারবেন।
১১. কোনো একটি টপিক নিয়ে কম সময়ে অনেক বেশি জানার জন্য গুগলের সহায়তা নিন। প্রয়োজনে বাংলায় টাইপ করে অপশনস কাস্টমাইজ করে খুঁজতে পারেন।
১২. মানসিক দক্ষতার জন্য অল্প সময়ে ভালো প্রস্তুতি নিতে তিনটা গাইডবইয়ের সব প্রশ্নোত্তর পড়ে ফেলুন।
১৩. আপনি অঙ্ক কম পারেন? আপনি অঙ্কে ৫০ পাবেন না, ৩৫ পাবেন এটা মেনে নিন। ১৫ নম্বরের জন্য যত বেশি টেনশন করবেন, অন্যান্য বিষয়ে আপনার ৫০ নম্বর হারানোর আশঙ্কা তত বেশি থাকবে।
১৪. যাঁরা ইংরেজিতে বেশি দুর্বল, তাঁরা বিসিএস লিখিত পরীক্ষার জন্য দরকারি, এমন কোনো টপিক নিয়ে ভুল হোক, শুদ্ধ হোক, প্রতিদিন ৩০ মিনিট ব্যয় করে ৫-৬ পৃষ্ঠা করে লিখবেন।
১৫. যাঁরা যে বিষয়টিতে ভালো, তাঁদের সঙ্গে পারতপক্ষে সে বিষয়ে আপনার দুর্বলতা নিয়ে এই সময়টাতে কোনো আলাপ করবেন না।
১৬. বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলির উত্তরের শেষ প্যারায় বিভিন্ন কলামিস্ট, বিশেষজ্ঞ ও আপনার নিজস্ব মতামত এবং বিশ্লেষণ দিলে নম্বর বাড়বে।
১৭. একটা প্রশ্ন মুখস্থ করার চেয়ে সে একই সময়ে কয়েকটা প্রশ্ন বিভিন্ন সোর্স থেকে পড়ে ফেলাটা বুদ্ধিমানের কাজ। আপনার রিডিং হ্যাবিট যত ভালো হবে, আপনার রাইটিং স্টাইল তত উন্নত হবে।
১৮. পরীক্ষায় মূল খাতায় চারদিকে মার্জিন করে আর অতিরিক্ত পাতায় চারদিকে ভাঁজ করে লিখতে পারেন। কোটেশন লিখতে নীল কালি ব্যবহার করুন।
১৯. গ্রন্থ সমালোচনা অংশের জন্য পরিচিত, গুরুত্বপূর্ণ মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ও অন্যান্য ৩০টি উপন্যাস সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিন।
২০. গভীর রাতে ঘুম তাড়াতে সহজ টপিকগুলো পড়ুন। ‘জাস্ট ৫ মিনিটের জন্য’ ফেসবুকে ঘুরে আসতে লগইন করবেন না।
২১. কোন বিষয়ে কত পেতে পারেন, এটা নিয়ে একটা ছক করে ফেলুন। গড়ে আপনার নম্বর যেন ৬৫ এর নিচে না নামে।
২২. কলিগরা আঁতেল বলুক আর যা-ই বলুক, চাকরিজীবীরা চাকরিতে যাওয়ার সময় সঙ্গে করে বিসিএসের গাইডবই নিয়ে যাবেন আর সুযোগ পেলেই পড়বেন।
২৩. আবারও মনে করিয়ে দিচ্ছি, রেফারেন্স বই পড়ার অত সময় এখন আর নেই। গাইডবই আর ইন্টারনেট থেকে সাজেশন ধরে ধরে পড়াশোনা করুন।
২৪. হাতের আঙুল আর কবজি ব্যথা না করে এ পর্যন্ত কেউই চাকরি পায়নি, আপনিও পাবেন না। কোন প্রশ্নের উত্তর কত পৃষ্ঠা লেখা উচিত, এমন কোনো নিয়ম নেই। আপনার চিন্তা করার আর লেখার দ্রুততার ওপরেই এটি সম্পূর্ণরূপে নির্ভর করে।
২৫. যাঁদের হাতের লেখা স্লো, তাঁরা কম লেখার ক্ষতিকে পুষিয়ে নেবেন বেশি বেশি তথ্য-উপাত্ত আর উদ্ধৃতি দিয়ে।
সূত্রঃ প্রথম আলো

No comments

Featured post

একনায়িকাতন্ত্র

আমার বুকের ভেতরের "মন" নামক রাষ্ট্রে ভালোবাসার অজুহাতে যে স্বৈরাচারী শাসন ব্যবস্থা চলছে, তার নাম একনায়িকাতন্ত্র। নায়িকার ইচ্ছেমতো...

Powered by Blogger.