ওয়াই-ফাই সিগন্যালকে বৃদ্ধি করার কিছু পদ্ধতি

ওয়াই-ফাই সিগন্যালকে বৃদ্ধি করার কিছু পদ্ধতি

আমরা বর্তমানে প্রায় সবাই কম বেশি ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকি। আর একই সাথে অনেকগুলো স্মার্ট ডিভাইসকে ইন্টারনেটের সাথে সংযোগ দেয়ার ক্ষেত্রে আমরা ব্যবহার করে থাকি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের রাউটার। তবে অনেকেই রাউটার থেকে আগত ওয়াইফাই সিগন্যাল নিয়ে সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকেন। রাউটার একেবারে হাতের নাগালে থাকার পরও আমরা আমাদের স্মার্ট ডিভাইসগুলোতে 'Poor Connection' প্রদর্শন করে থাকে যা খুবই বিরক্তিকর একটি অবস্থার সৃষ্টি করে। আজকে আমরা জানবো কীভাবে এই ওয়াইফাই সিগন্যালকে বৃদ্ধি করা যায় যেন আমাদের ইন্টারনেট এক্সপেরিয়েন্সে আমরা কোন প্রকার বাঁধার সম্মুখীন না হই। চলুন তাহলে, শুরু করে দেয়া যাক।

চেষ্টা করুন সর্বাধুনিক ওয়াই-ফাই প্রযুক্তি ব্যবহার করার

আপনার যদি নিরবিচ্ছিন্ন এবং শক্তিশালী ওয়াই-ফাই সিগন্যালের দরকার হয় তবে অবশ্যই আপনার উচিৎ হবে আপ-টু-ডেট হার্ডওয়্যার ব্যবহার করা। আর যদি কোন কারণে আপনি আপ-টু-ডেট হার্ডওয়্যার ব্যবহার করতে না পারেন সেক্ষেত্রে আপনার পুরাতন রাউটারটির সর্বশেষ ফার্মওয়্যার ব্যবহার করুন। অনেক সময়ই রাউটারের সিগন্যাল এবং অন্যান্য সব সমস্যা নতুন ফার্মওয়্যার আপডেটের মাধ্যমে সমাধান করা যায়।

১) রাউটারটি ফাঁকা স্থানে রাখুন

চমৎকার সিগন্যাল না পাওয়ার জন্য কিন্তু শুধু আপনার ওয়াই-ফাই রাউটারটিই দায়ী নয় বরং অনেক ক্ষেত্রে আমরা নিজেরাও দায়ী। এমন অনেক কিছুই আছে যা রাউটারের আশে পাশে থাকলে রাউটারের সিগন্যালে ব্যাঘাত ঘটায়। আবার আপনি যদি দেয়ালের অপর প্রান্তে রাউটারটি রাখেন তবে যেহেতু রাউটার এবং আপনার স্মার্ট ডিভাইসটির মাঝে একটি বাঁধা থেকে যাচ্ছে তাই আপনি দূর্বল সিগন্যাল পেতেই পারেন। তাই চেষ্টা করুন রাউটার এমন কোন স্থানে রাখতে যার আশে পাশে কোন রকম অবস্ট্যাকল নেই।

২) সঠিক ওয়্যারলেস চ্যানেলটি ব্যবহার করুন

আপনার রাউটার থেকে আগত ওয়াই-ফাই সিগন্যালটি আপনার ডিভাইসে সার্ভিস প্রদানের পূর্বে একটি চ্যানেল ব্যবহার করে থাকে। এখন ধরুন, আপনার পাশের রুমে আরেকজন ব্যবহারকারী একটি রাউটার ব্যবহার করছে যা আপনার রাউটারটির চ্যানেলে ইন্টারফেয়ার করছে, এর ফলে আপনি দূর্বল সিগন্যাল পেতে পারেন। তাই আপনার উচিৎ সঠিক চ্যানেলে ওয়াই-ফাই ব্যবহার করা। এর জন্য আপনি ওয়াই-ফাই স্টাম্বার অথবা ওয়াই-ফাই অ্যানালাইজার নামক টুল দুটি ব্যবহার করে দেখতে পারেন।

৩) অন্যান্য হোম অ্যাপ্লায়েন্স থেকে আপনার রাউটারটি কিছুটা দূরে রাখুন

শুধুমাত্র যে অন্য একটি রাউটারই আপনার রাউটারের সিগন্যালে বাঁধা সৃষ্টি করতে পারে তা কিন্তু নয়, বরং এমন অনেক স্মার্ট হোম অ্যাপ্লায়েন্স রয়েছে যেগুলো আপনার রাউটারের সিগন্যালে সমস্যার সৃষ্টি করে। যেমন ধরুন, কর্ডলেস ফোন, মাইক্রোওয়েভ ইতযাদি! আপনার রাউটারটি যদি একটি ডুয়াল ব্যান্ড রাউটার হয়ে থাকে তবে এই সমস্যা থেকে আপনি সহজেই মুক্তি পাবেন কিন্তু যদি তা না হয় তবে আপনি আপনার কর্ডলেস ফোনটি রাউটার থেকে বেশ দূরে এবং সম্ভব হলে আপনার বাসার শেষ প্রান্তেও ব্যবহার করতে পারেন।

৪) পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন

আমি মাঝে মাঝে এমন ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ক পেয়েছি যেগুলোতে পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা হয়না। হয়ত সেই রাউটারগুলো অফিসিয়াল যেখানে তারা সিকিউরিটি নিয়ে এতটা মাথা ঘামায়নি বা এমন কারও যিনি পাসওয়ার্ডের বিষয়টিই জানেন না। যাই হোক, আপনিও যদি আপনার রাউটারে পাসওয়ার্ড ব্যবহার না করে থাকেন তবে অন্য কেউ আপনার তৈরি নেটওয়ার্কটি ব্যবহার করতে পারবে ফলে আপনি স্পিড কম পাবেন! তাই প্রত্যেকের উচিৎ অন্তত WPA পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা। যদিও এই সিকিউরিটি সিস্টেমটিও হ্যাক করা সম্ভব তবে 'নাই মামার চাইতে কানা মামাও ভালো', কি বলেন?

৫) ব্যান্ডউইথ-হাংগরি অ্যাপলিকেশনগুলো কনট্রোল করুন

আপনার ডিভাইসে ব্যান্ডউইথ কম পাচ্ছেন? এমনওতো হতে পারে যে এটি আপনার রাউটারের দোষ নয়! আপনার বাসায় কেউ যদি টরেন্ট ক্লায়েন্ট ব্যবহার করে থাকে বা অনলাইনে গেম খেলে থাকে অথবা নেটফ্লিক্সের মত সেবা ব্যবহার করে থাকে তবে সেই অ্যাপলিকেশনগুলো অধিকাংশ ব্যান্ডউইথ দখল করে রাখছে! খুঁজে দেখুন সত্যিই এমন কিছু হচ্ছে কি না।

৬) ওয়াইফাই এক্সটেন্ডার ব্যবহার করুন

ধরুন আপনার রাউটারটি থেকে আপনি বেশ কিছুটা দূরে বা ওয়াই-ফাই ডিভাইসটির রেঞ্জের বাইরে, সেক্ষেত্রে আপনি ওয়াই-ফাই এক্সটেন্ডার ব্যবহার করতে পারেন। ওয়াই-ফাই এক্সটেন্ডার আপনার রাউটার থেকে সিগন্যাল ক্যাচ করে সেটি সেই পয়েন্টথেকে বুস্ট করতে সক্ষম এবং ফলে আপনি খুব সহজেই ওয়াই-ফাই এক্সটেন্ডারের সাহায্যে ওয়াই-ফাই এর সিগন্যাল বুস্ট করতে পারবেন।
পুরাতন রাউটারটিকে ব্যবহার করতে পারেন ওয়াই-ফাই রিপিটার হিসেবে।
ওয়াই-ফাই এক্সটেন্ডার ডিভাইসগুলোর মূল্য যে খুব বেশি তা কিন্তু নয়। তবে এর পরও যদি আপনি সেই ডিভাইসটির জন্য খরচ করতে না চান এবং আপনার কাছে একটি পুরাতন ওয়াইফাই ডিভাইস থেকে থাকে তবে আপনি সহজেই সেই রাউটারটি ওয়াই-ফাই এক্সটেন্ডার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।

৭) রিবুট শিডিউল তৈরি করুন

অনেক সময় ধরে রাউটার শিডিউল না করা হলে রাউটার মাঝে মাঝে (রেয়ার কেস) সমস্যা করে থাকে। ফলে দিন যদি দুই বা একবার ডিভাইসটিকে রিবুট করা যায় তবে এটি ভালো সার্ভিস দেয়। এখন সমস্যা হচ্ছে সময় ধরে প্রতিদিন রিবুট করাটা সত্যিই ঝামেলার! তাই আপনি এই রিবুট প্রসেসের জন্য একটি শিডিউলই তৈরি করে ফেলুন না! কাজও সহজ হল, ভালো সার্ভিসও পেলেন।

No comments

Featured post

একনায়িকাতন্ত্র

আমার বুকের ভেতরের "মন" নামক রাষ্ট্রে ভালোবাসার অজুহাতে যে স্বৈরাচারী শাসন ব্যবস্থা চলছে, তার নাম একনায়িকাতন্ত্র। নায়িকার ইচ্ছেমতো...

Powered by Blogger.