টিউশন সমাচার:: HP Hasan
"তোমার মতো কমার্শিয়াল ছেলে জীবনে দেখি নাই, বাবা"- ছাত্রের মা (টিউশন)
রোহান ছেলেটাকে অামি গত পাঁচ বছর ধরে জানি। অাজকাল এমন ছেলে পাওয়া যাবে না।সে দুই দিন না খেয়ে থাকলেও কারো কাছে হাত পাতবে না। অাজ সকালে হটাৎ অামার বাসায় এসে হাজির। কাঁদতে কাঁদতে অামায় বললো অাজ ৭ দিন ধরে তার মায়ের অসুখ, মাকে দেখতে খুব ইচ্ছে করছে কিন্তু তার পকেটে বাড়ি যাওয়ার ভাড়টা পর্যত্ন নাই। তার কথা শুনে পচণ্ড মন খারাপ হয়ে গেল।
.
রোহান ছেলেটাকে অামি গত পাঁচ বছর ধরে জানি। অাজকাল এমন ছেলে পাওয়া যাবে না।সে দুই দিন না খেয়ে থাকলেও কারো কাছে হাত পাতবে না। অাজ সকালে হটাৎ অামার বাসায় এসে হাজির। কাঁদতে কাঁদতে অামায় বললো অাজ ৭ দিন ধরে তার মায়ের অসুখ, মাকে দেখতে খুব ইচ্ছে করছে কিন্তু তার পকেটে বাড়ি যাওয়ার ভাড়টা পর্যত্ন নাই। তার কথা শুনে পচণ্ড মন খারাপ হয়ে গেল।
.
তাকে জিজ্ঞাস করলাম -"টিউশনে বেতন পাও নাই? " জবাবে সে বলে তার ছাত্রের বাবা নাকি এইবার হজ্বে গিয়েছে। তাই গত তিন মাসের বেতন অাটকা পড়ে অাছে!!!অাবার জানতে চাইলাম- " তুমি বেতন খুঁজ নাই তাদের কাছে? " সে অমায় বলে প্রথম দুই মাস লজ্জায় টাকা চায়নি। কিন্তু গত কিছু দিন ধরে মায়ের শরীর খারাপ তাই লজ্জা সরমের মাথা খেয়ে টাকা চাওয়ার পর ছাত্রের মা বলেছে, " তোমার মতো কমার্শিয়াল ছেলে জীবনে দেখি নাই। দেখতেই পাচ্ছ তোমার অাঙ্কেল হজ্ব থেকে অাসার পর টাকা পয়সার টানাটানিত অাছি। "
অামি অবাক না হয়ে পারি না। যিনি ৫ লাখ টাকা খরচ করে হজ্ব করতে পারেন, তিনি ৩০০০ টাকা স্যারের বেতন দিতে পারছেন না! তারা কি টাকার অভাবে কাঠাল পাতা খাচ্ছে??
.
কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেরা টিউশন করে। কারণ এই বয়সে বাবার কাছ থেকে পকেট খরচের টাকা চাইতে দৃষ্টিকটু লাগে। অনেকেই অাছে টিউশন করে নিজের পড়াশুনার খরচ চালায়, পরিবার চালায়। অামি নিজে এক সময় অনেক টিউশন করতাম। কারণ অামার পড়াতে ভাল লাগে, চাকরির প্রস্তুতিতে সহায়তা করবে এবং টাকা। অনেকের ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক কারণটাই প্রধান,তা হতেই পারে।
অাপনার ফ্রিজ ভর্তি ফলমূল স্যারকে দিবেন শক্ত টোস্টবিস্কিট, তাও অাবার সেটা অাসবে দেড় ঘণ্টা পর। অাপনি ত্রিশ হাজার টাকা বাসা ভাড়া দিতে সমস্যা হয় না, তিন হাজার টাকা স্যারের বেতন দিতে গিয়ে দিন হিসাব করেন! শীতের সকালে কাঁপতে কাঁপতে, গ্রীষ্মের দুপুরে ঘমতে ঘামতে, বর্ষার বিকালে ভিজতে ভিজতে স্যার অাসে সেইটা হিসাব করেন না, ঈদের ছুটির বেতন পর্যত্ন কেটে রাখেন!
মেয়েকে সপ্তাহে দুই বার ভ্রু প্লাক করার টাকা দিতে পারেন, ছেলেকে দুই হাজার টাকার ক্রিকেট বেট কিনে দিতে পারেন , একবারোতো চোখে পড়ে না স্যারের জুতা জোড়ায় কতবার সেলাই পড়েছে!! মুখেই শুধু বাবা বাবা বললে হয় না। মনেপ্রাণে অাপনারাই কমার্শিয়াল!
.
অাপনার সন্তানের প্রয়োজন গাইডলাইন, স্যারের প্রয়োজন টাকা,,,,, ব্যাপারটা সিম্পল। তাই সময়মত স্যারের বেতন দিন, তাদের শ্রদ্ধা করতে শিখুন। নয়তো রোহানের মতো স্যারের কান্নার অভিশাপে অাপনার ছেলে হবে বদরুল অার মেয়ে হবে ঐশি!!
No comments