স্মৃতিশক্তি বাড়াতে যা করণীয়

নিয়ম মেনে জীবন চলুক। আদর্শ কিছু নিয়মে আপনার জীবনে শৃংখলা ফিরে আসবে। প্রতিদিন সবকিছু নির্দিষ্ট স্থানে রাখুন এবং মনে রাখুন কোথায় কি রাখছেন। কখনই অস্থির হবেন না। জিনিসপত্র এলোমেলো করে রাখবেন না, বা জিনিসগুলো রাখার বেলায় ঘন ঘন স্থান পরিবর্তন করবেন না।

স্মরণশক্তি বা স্মৃতিশক্তি সবার একরকম হয় না। অনেক মানুষ আছে যারা সহজে অনেক তথ্য মনে রাখতে পারেন। আবার অনেকে সময় আমরা হরহামেশাই অনেক কিছু ভুলে যাই। শতকরা প্রায় ৮০ ভাগ মানুষ মনে করে তাদের সমস্যা আছে- নাম মনে রাখার ব্যাপারে। আবার ৬০ ভাগ মানুষের হয়তো এমন সমস্যা হয় যা তারা কোনো নাম্বার এবং স্থানের নাম দিব্যি ভুলে যায়।

গড়ে প্রতিটি মানুষ সপ্তাহে একাধারে কোনো নির্দিষ্ট কাজের কথা ভুলে যায়। আপনি যদি আপনার স্মৃতিশক্তি নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকেন, তবে তা ভালো লক্ষণ। আপনার যদি স্মরণশক্তির কোনো সমস্যা থেকে থাকে তবে তা হল আপনার মনে আসে না বলেই মনে থাকে না।

এ বিষয়ে রাজধানীর গেণ্ডারিয়ার আজগর আলী হাসপাতালের চিফ ডায়েটিশিয়ান সেলিনা বদরুদ্দিন বলেন, স্মৃতিশক্তি বাড়াতে মস্তিষ্কের সুস্থতা জরুরি। মস্তিষ্ক সতেজ সজিব ও টেনশনমুক্ত থাকলে স্মৃতিশক্তির ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এজন্য পুষ্টিকর খাবার বেশি খাবেন। মনে রাখবেন স্বাস্থ্যকর খাবার শুধু শরীর ঠিক রাখে না, মস্তিষ্কও সুস্থ রাখে। এমন ঘটনা মাঝে মাঝেই ঘটে, আপনি শোবার ঘর থেকে রান্নাঘরে গেলেন কিছু একটা চিন্তা করে। কিন্তু রান্নাঘরে গিয়েই ভুলে গেলেন কী জন্য এসেছেন?

এ কারণেই মধ্যবয়স্কদেরও স্মৃতিশক্তি ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে বিশেষ কিছু খাবার প্রয়োজন। এক ঝলকে দেখে নিন সেগুলো কী কী?

তৈলাক্ত মাছ স্মৃতিশক্তি বাড়াতে বিশেষ উপকারী। যেমন স্যামন, সার্ডিন, টুনা, ম্যাকরেল প্রভৃতি মাছ নিয়মিত খাওয়া উচিত।

টমেটো স্মৃতিশক্তি সক্রিয় রাখতে সাহায্য করে। টমেটোতে রয়েছে লাইকোপেন, যা খুবই শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। নিয়মিত খাবারের সঙ্গে সালাদ হিসেবে টমেটো খেলে তা মস্তিষ্কের জন্য উপকারী।

ভিটামিন বি, বি৬, বি১২ সমৃদ্ধ খাবার বেশি বেশি খাওয়া প্রয়োজন। মাছ, মুরগির মাংস, ডিম এবং শাকজাতীয় খাবারে এর পরিমাণ বেশি থাকে।

শস্যজাতীয় খাবার, বাদাম, ব্রকোলি, কুমড়োর দানা মস্তিষ্কের বিকাশের ক্ষেত্রে অনেক বেশি উপযোগী। আপনার নিয়মিত ডায়েট চার্টে এসব খাবার বেশি বেশি রাখুন।

এ ছাড়া নিচে কয়েকটি টিপস দেয়া হল যা আপনার স্মরণশক্তি বাড়াতে সাহায্য করবে।

১. উদ্বিগ্নতা এবং দুশ্চিন্তা সাময়িকভাবে আপনার স্মৃতিশক্তি দুর্বল করে ফেলতে পারে। এতে করে স্মৃতিশক্তি কমে যেতে পারে। চেষ্টা করুন টেনশনমুক্ত, শান্ত এবং স্থির থাকতে।

২. জীবনযাপনের পদ্ধতি পরিবর্তন ও উন্নত করুন এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন। কম ফ্যাটযুক্ত খাদ্য, ভালো অভ্যাস এবং নিয়মিত ব্যায়াম আপনার স্মৃতিশক্তিকে অটুট রাখতে ভূমিকা রাখবে।

৩. যা আপনি ভাবছেন বা ভাবেন তা রোমন্থন করার চেষ্টা করুন। চোখের সমস্যা থাকলে ডাক্তার দেখান।

৪. নিয়ম মেনে জীবন চলুক। আদর্শ কিছু নিয়মে আপনার জীবনে শৃংখলা ফিরে আসবে। প্রতিদিন সবকিছু নির্দিষ্ট স্থানে রাখুন এবং মনে রাখুন কোথায় কি রাখছেন। কখনই অস্থির হবেন না। জিনিসপত্র এলোমেলো করে রাখবেন না, বা জিনিসগুলো ঘন ঘন স্থান পরিবর্তন করবেন না।

৫. যখনই আপনি কোনো কিছুর নাম মনে করতে পারছেন না বা আপনার স্মৃতিতে কোনো কিছু ভেসে উঠছে না তখন পারস্পরিক যোগাযোগের মাধ্যমে মনে করার চেষ্টা করুন।

৬. রাতে ঘুমানোর আগে এক গ্লাস গমর দুধ খাওয়ার অভ্যাস করুন, এতে শরীর ও মন সতেজ থাকে।

৭. নিয়মিত সতেজ সবুজ শাকসবজি ও সালাদ খাবেন। বেশি করে পানি পান করবেন। শরীরে কোনো ভিটামিনের অভাব থাকলে তা পূরণ করতে ভিটামিন গ্রহণ করুন। পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমাবেন, দুশ্চিন্তা এড়িয়ে চলবেন। পেটের অসুখ হলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসা গ্রহণ করুন। নিয়মিত হালকা ব্যায়াম করুন। নিজের প্রতি আস্তা রাখুন, সব সময় পজেটিভ ধারণা পোষণ করুন।

আপনার সব চাওয়া-পাওয়ার জন্য স ষ্টার সাহায্য প্রার্থনা করুন। জীবনের সব ক্ষেত্রে নিয়ম-নীতি মেনে চললে আপনার সুখ, সৌন্দর্য ও ঐশ্বর্য আপনার নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

No comments

Featured post

একনায়িকাতন্ত্র

আমার বুকের ভেতরের "মন" নামক রাষ্ট্রে ভালোবাসার অজুহাতে যে স্বৈরাচারী শাসন ব্যবস্থা চলছে, তার নাম একনায়িকাতন্ত্র। নায়িকার ইচ্ছেমতো...

Powered by Blogger.